ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিলেন সেই তরুণী

মুখে রুমাল বেঁধে গাড়িতে তরুণীকে ধর্ষণ করেছিল রনি। এ সময় রনির মুখে ছিল মদের গন্ধ। অশালীন ভাষা ব্যবহার করে তরুণীকে গালি দিয়েছিল সে। নির্যাতিত তরুণী জানিয়েছেন এসব তথ্য। এই মামলায় তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে রনিকে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে রনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদকে বুঁদ হয়ে থাকা রনির স্বভাব। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার কথা বলে প্রায়ই রাতে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যেত।

বাসায় ফিরতো গভীররাতে, কখনও কখনও ভোরে। ব্যবসা ও রাজনীতি করার কারণে এসব বিষয়ে সন্দেহ করতেন না তার স্ত্রী। স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় প্রভাব খাটাতেন বিভিন্নক্ষেত্রে। রাত-বিরাতে নানা স্থানে আড্ডাবাজি, গাড়িতে বসে বিয়ার ও মদ পান করলেও আগে কখনও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে হয়নি তাকে।

ধানমন্ডি মিতালী রোড এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় বন্ধুদের নিয়ে প্রায়ই আড্ডা বসাতো রনি। স্থানীয় কয়েক নেতা ও তার ব্যবসায়ী বন্ধুরা অংশ নিতো ওই আড্ডায়। সেখানে কলগার্লরাও থাকতো। ঘটনার কিছুদিন আগে থেকেই ধানমন্ডির ওই বাসার মালিক আড্ডা বন্ধ করে দেন। তারপর প্রায়ই রাতে গাড়িতে করে বাইরে চলে যেতো রনি।

গত ১০ই জুন রাতে ধর্ষণের অভিযোগে তাকে গণপিটুনি দিয়ে জনতা পুলিশে সোপর্দ করার পর প্রকাশ পাচ্ছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজধানীর কলেজ গেট এলাকায় প্রাইভেট কারে তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার মাহমুদুল হক রনিকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আহসান হাবিব উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে রনি ওই রাতের পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে।

পুলিশকে রনি জানিয়েছে, মেয়ে দু’টিকে গাড়িতে তুলে নেয়ার সময় মাদকের নেশায় বুঁদ হয়েছিলো সে। রনি স্বীকার করেছে, প্রায় রাতেই গাড়ি নিয়ে লং ড্রাইভে বের হয় সে। কখনও কখনও তার দুই-এক বন্ধু সঙ্গী হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরে বাংলানগর থানার উপ-পরিদর্শক মিনহাজ উদ্দীন ধর্ষণের মামলার তদন্তের জন্য মাহমুদুল হক রনির সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে হাজির করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. যোনাইদ উল্লাহ শোয়েব রনির জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আসামির তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রনির বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তার বাবা মৃত ফজলুল হক। ঢাকায় ধানমন্ডি-১৫ নম্বরের মিতালী রোডের একটি বাড়িতে থাকেন রনি। পেশায় নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করেছেন তিনি। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।